সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুম্বইয়ে ২৬/১১ হামলায় স্ত্রী ও দুই ছেলেকে হারিয়েছিলেন হোটেল তাজের ম্যানেজার করমবীর কাং। শুক্রবার নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সন্ত্রাসের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের সম্মেলনে সেই করমবীর কাং বলেন, সেদিন যারা হামলা চালিয়েছিল ভাগ্য তাদের শিক্ষা দিয়েছে, কিন্তু যাঁরা নৃশংস ওই চক্রান্ত করেছিল, অর্থ যুগিয়েছিল, তারা জেলের বাইরে মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে! মুম্বইয়ে হওয়া হামলার ১৪ বছর পর ২৬/১১ মামলায় ন্যায়বিচারের দাবি তুললেন করমবীর। তাঁর মতে সেই বিচার মিলতে পারে তখনই, যখন আর একটিও জঙ্গি হামলার মুখোমুখি হতে হবে না সভ্যতাকে।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বরের হামলার সময় মুম্বই তাজের জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন করমবীর সিং। হামলায় তাঁর সহকর্মী, হোটেল গ্রাহক-সহ ৩৪ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ছিলেন করমবীরের স্ত্রী ও দুই ছেলে। তাঁরা সেদিন নৃশংস জঙ্গিদের নাগাল এড়িয়ে পালাতে পারেনি। করমবীর বলেন, “আমি সবকিছু হরিয়েছিলাম… সাহসী সহকর্মীদেরও হারাই। যাঁদের সাহসিকতার জন্য হোটেলের কয়েক হাজার মানুষের প্রাণ বেঁচে যায়।”
আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের দেওয়া ভাষণে সন্ত্রাসবাদী হামলায় বিপর্যস্ত ব্যক্তি ও পরিবারের পক্ষে আবেদন জানান করমবীর। তাঁর মতে, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। মুমোবি হামলার ভুক্তভোগীরা ১৪ বছর ধরে বিচারের আশায় দিন গুনছেন। করমবীর বলেন, “সেদিন যারা হামলা চালিয়েছিল ভাগ্য তাদের শিক্ষা দিয়েছে, কিন্তু যাঁরা নৃশংস ওই হামলার পরিকল্পনা করেছিল, তার জন্য অর্থ যুগিয়েছিল, তারা কিন্তু মুক্তবাতাসে শ্বাস নিচ্ছে। আজ আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, ন্যায়বিচার দিতে একসঙ্গে কাজ করুন।” করমবীর আরও বলেন, “আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, জঙ্গিদের জন্য যেন পৃথিবীর কোনও স্থান সুরক্ষিত না হয়। যাতে করে নৃশংস অপরাধের চক্রান্ত করা সম্ভব না হয়।”
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর পাক সন্ত্রাসবাদীদের হামলায় কেঁপে উঠেছিল বাণিজ্যনগরী মুম্বই। ১০ জন লস্কর জঙ্গি করাচি থেকে সমুদ্রপথে মুম্বইয়ে প্রবেশ করেছিল। এরপর তাজ হোটেল, হাসপাতাল, রেল স্টেশন, রেঁস্তরায় নৃশংসভাবে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গীরা। এই ঘটনায় নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মৃত্যু হয় অধিকাংশ জঙ্গির। তবে, জীবিত অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয় আজমল কাসবকে। তার কাছ থেকে জেরায় জানা যায় এই হামলার পেছনে থাকা অনেক তথ্য। মুম্বই হামলার কয়েক বছর পরে শেষপর্যন্ত কাসবকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসি দেয় আদালত।